• সোমবার ০১ জুলাই ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

  • || ২৩ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

বরগুনার আলো
ব্রেকিং:
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের বাজেট পাস দেশের ইতিহাস ও সাফল্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে দুর্নীতি করলে কারো রক্ষা নেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের বাজেট পাস হচ্ছে আজ সব বিভাগীয় শহরে মেট্রোরেল চালু করবো: প্রধানমন্ত্রী কিছু আঁতেল সবকিছুতেই সমালোচনা করেন: শেখ হাসিনা এই বাজেট বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে এসএসএফ সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা দুই বছরের করার পরিকল্পনা সরকারের বাংলাদেশের জনগণের কাছে আমি কৃতজ্ঞ : শেখ হাসিনা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে আমি মারা যাব: প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে মাদক অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রয়োগ করছে সরকার নোবেল পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার নেই : শেখ হাসিনা সহজে এলডিসি উত্তরণে সুইডেনের সমর্থন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী ড. ইউনূস কর ফাঁকি দিয়েছেন, তা আদালতে প্রমাণিত: প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না’ অভিন্ন নদীর টেকসই ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার পথ নিয়ে আলোচনা করেছি

বাজেট পাস কাল, থাকছে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

বরগুনার আলো

প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২৪  

এমপিদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা প্রত্যাহার নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। নানান জল্পনা কল্পনা শেষে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে ৪০ শতাংশ কর বসানোর প্রস্তাব করা হয় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে।

তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারে সরকার। এছাড়া কর অবকাশ সুবিধার পাশাপাশি শর্ত সাপেক্ষে ইকোনমিক জোন ও হাইটেক পার্কের বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানিতে আগের মতোই জিরো ডিউটি সুবিধা বহাল থাকতে পারে। অন্যদিকে, নানান সমালোচনার পরও কালো টাকা সাদা করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটছে না সরকার।

এসব নিয়েই আজ শনিবার (২৯ জুন) পাস হতে পারে অর্থবিল। জাতীয় সংসদে আগামীকাল, রোববার পাস হবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট। পরদিন, ১ জুলাই থেকে নতুন বাজেট কার্যকর হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে ছোটখাটো দু-একটি বিষয় ছাড়া তেমন কোনো বড় সংশোধনীর সম্ভাবনা নেই।

প্রস্তাবিত বাজেটে সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপের আহ্বান জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবু হাসান মাহমুদ আলী। তবে শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর নাও হতে পারে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনি জটিলতায় এ পদক্ষেপ থেকে সরে আসতে পারে সরকার। কেননা সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে বিদ্যমান আদেশ সংশোধনের কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। ফলে আগের মতো এবারও এমপিরা শুল্কমুক্ত কর সুবিধা ভোগ করতে পারেন।

এনবিআর সূত্র জানায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। পরে মঙ্গলবার (২৬ জুন) বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যায়ক্রমে কর অব্যাহতি কমিয়ে কর জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। পাশাপাশি আর্থিক খাত সংস্কারের পরামর্শ ও দিয়েছে সংস্থাটি।

আন্তর্জাতিক এ সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, আইন প্রণেতাদের গাড়ি আমদানিতে থাকা কর অব্যাহতি তুলে নেওয়ার মাধ্যমে এ কার্যক্রম জোরদার করতে চেয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে সংসদ সদস্যদের এ সুবিধা পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার প্রস্তাবটি সংসদে পাস না হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের আগে আইন প্রণেতাদের গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানোর প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয় প্রত্যাখ্যান করেছিল।

গত ৬ জুন বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক-কর অব্যাহতি আছে। সব স্তরে অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য সবাইকে রাজস্ব দিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য শুল্ক-কর ছাড়া গাড়ি আমদানির নীতিতে কিছুটা পরিবর্তন একটি মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। এই উদ্দেশ্যে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে অব্যাহতির সুবিধা পরিবর্তন করা যেতে পারে। এ লক্ষ্যে সংসদ সদস্যদের (পারিশ্রমিক ও ভাতা) আদেশ ১৯৭৩-এ সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করছি।

জানা গেছে, কর অবকাশ সুবিধার পাশাপাশি কিছু শর্ত সাপেক্ষে ইকোনমিক জোন ও হাই-টেক পার্কের বিনিয়োগকারীদের ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানিতে আগের মতই জিরো ডিউটি সুবিধা বহাল থাকতে পারে। এছাড়া শেয়ারবাজারে ক্যাপিটাল গেইনের উপর নতুন করে আরোপ করা ট্যাক্স অব্যাহত থাকতে পারে।

ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে এবার অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর অবকাশ সুবিধা বহার রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশি বিনিয়োগে ভাটা পড়েছে। দেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। এমন অবস্থায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে কর আরোপ করা হলে বিনিয়োগ কমে আরও শোচনীয় পর্যায়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এ কারণে হাই-টেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগে কর অবকাশ অব্যাহত রাখা হতে পারে। ২০২৪-২৫ এর প্রস্তাবিত বাজেটে এই অঞ্চলগুলোর মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছিল। তবে তা আগের মতো ০ শতাংশ হতে পারে।

এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের ওপর ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। এতে বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন আপত্তি থাকলেও তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না। সংশোধনী বাজেটে আগের মতোই ৫০ লাখ টাকা লাভের ওপর কর আরোপের সিদ্ধান্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদের প্রবল সমালোচনার মুখেও কালো টাকা সাদা করার বিধান থেকে সরছে না সরকার। এ সুযোগ বহাল থাকলে আগামী ১ জুলাই থেকে ১৫ শতাংশ কর প্রদানের মাধ্যমে ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই ছাড়াই কালো টাকা সাদা করতে পারবেন। সরকারি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্ন করতে পারবে না।

নতুন বিধান অনুযায়ী, কোনো করদাতা ফ্ল্যাট ও জমির মতো স্থাবর সম্পত্তির জন্য নির্ধারিত হারে কর প্রদান করলে এবং নগদ, সিকিউরিটিজ, ব্যাংক আমানত ও সঞ্চয় স্কিমসহ অন্যান্য সম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

গত ৬ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এ বিধান উপস্থাপন করেন। চলতি সংসদ অধিবেশনেই সংসদ সদস্যরা বিধানের তীব্র সমালোচনা করেন।

চলতি সপ্তাহে ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ কে আজাদ জাতীয় সংসদে বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। তাহলে কালো টাকার উৎস কেন যাচাই করা যাবে না? সার্বভৌম সংসদ কীভাবে কালো টাকার পাচারকে বৈধতা দিতে পারে তা বোধগম্য নয়।

সংসদে কুমিল্লা-৭ আসনের প্রাণ গোপাল দত্ত, মানিকগঞ্জ-১ আসনের জাহিদ মালেক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুন নাহার বেগম সম্প্রতি সংসদে এই বিধানের সমালোচনা করেন। এছাড়া সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি), সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম), টিআইবি এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি এই বিধানের সমালোচনা করেছে।

বরগুনার আলো